<--------------------------------------->
এতো রাতে আগে কখনো উঠার অভ্যাস নেই তাই নামাজ শেষ করে সে বিছানাই গিয়ে ঘুমিয়ে পড়লো।
-
সকাল হতেই হটাৎ চারুর চোখে রোদ লাগতেই তার চোখদুটো খুলে গেলো।তাকাতেই দেখে সোহান তার কাছে হাজির।
---এখনো ঘুমিয়ে আছো?ঘড়িতে কতো বাজে সেটা দেখেছো?(সোহান)
---আপনি একটু সাড়া দিলেই উঠে যেতাম।তো বলুন এখন আমাকে কি করতে হবে?
---আজকে তোমাকে পতিতালয় ভ্রমন করতে নিয়ে যাবো।
---কি?সত্যি আমাকে সেখানে নিয়ে যাওয়া হবে?
---হ্যা তুমি ঘুম থেকে উঠে দেখ একটা কাপড় রাখা আছে।সেটা পড়ে বাইরে চলে এসো।
কথাটা বলে সোহান রুম থেকে বের হয়ে গেলো।চারুর মন খুশিতে ভরে গেলো।তার ইচ্ছাটা আজকে পূরন হতে যাচ্ছে।টেবিলের উপর তাকিয়ে দেখে তার জন্য একটা পোশাক রাখা আছে।প্যাকেট থেকে পোশাক বের করে বুঝতেই পারছে না এটা কিভাবে পরিধান করে?
পাশে খেয়াল করে দেখলো তার জন্য ও সোহান ব্যবস্থা করে রেখেছে।পোশাকটা পড়ে আয়নার সামনে যেতে সে নিজের মুখ নিজেই ঢেকে নিলো।
এটা কি?তার শরীরের প্রায় অংশই তো দেখা যাচ্ছে।নিজেকে তার খুব খারাপ লাগছিলো।কিন্তু সোহান পড়তে বলেছে বিধাই সে সেটাই পড়ে বাইরে বের হয়ে এলো।চুপিচুপি চারু গাড়ির ভিতরে বসে নিজেকে আড়াল করার চেষ্টা করছে।সোহান চারুর এমন কান্ড দেখে মুচকি মুচকি হাসি দিচ্ছে।
সোহান জানে চারু একবার সেখানে যাবার পর আর ভুলেও এইরকম পরিকল্পনা করবে না।
তবে চারুকে দেখতে বেশ হয়েছে।কিন্তু চারুর দিকে তাকাতে পারছে না।চুপচাপ হাসিটা থামিয়ে রেখে গাড়িটা নিয়ে রওনা দিলো।
-
পতিতালয়ের গেটে সোহান গাড়িটা থামাতেই চারপাশের ছেলেপেলে গুলো কিছু একটা আচ করতে পেরেই চুপচাপ এক কোনাই গিয়ে দাড়িয়ে রইলো।গাড়ি থেকে সোহান নামতেই খেয়াল করলো চারপাশটা একদম ফাকা।সে পিছনে তাকাতেই দেখে তার পিছনে ১৫ টা গাড়ি দাড়ানো।সোহান একটা হাসি দিয়ে চুপচাপ ভিতরে চলে গেলো।
চারু গাড়ি থেকে নামছে আর চারপাশটা বারবার দেখছে।মনে মনে বলতে লাগলো,,
---ছি কি বিচ্ছিরি পোশাক।ওড়নাটাও নেই।কোমর আর হাটু এভাবে বের হয়ে থাকলে লোকজন তাকে দেখে কি ভাববে?
গেটের ভিতরে যেতেই চারুর চোখদুটো বড় হয়ে গেলো।কি সব হচ্ছে এখানে?যে যেখানে পারছে সেখানে কিসব আজেবাজে কাজ করছে।পাশের রুম থেকে আওয়াজ আসতেই চারু এক চিৎকার দিয়ে দৌড়ে দুরে চলে
এলো।চারদিকের মেয়েদের গায়ে তার থেকেও বিচ্ছিরি পোশাক।কেউ কেউ আবার নিজেই ছেলেদেরকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে।
হটাৎ তার এক পাশে নজর যেতেই কিছুটা এগিয়ে গিয়ে রুমে একটু উকি দিতেই এক ঝটকায় মাটিতে পড়ে গেলো।এখানে কি করা হচ্ছে মেয়েদের সাথে।
চারুর পাশের মেয়েটাকে হটাৎ করে কয়েকটা ছেলে এসে উচু করে নিয়ে চলে গেলো।মেয়েটা অনেক চেষ্টা করেও নিজেকে বাচাতে পারলো না।তার মনে একটা প্রশ্ন জাগলো?
তার পাশ থেকে মেয়েটাকে নিয়ে গেলো।কিন্তু তাকে কেন কেউ কিছু বললো কেন?কথাটা ভাবতেই হটাৎ তার বুকের দিকে খেয়াল করতেই দেখে একটা কার্ড লাগানো।
চারু একটু ভালো করে লক্ষ করে দেখে সেখানে একটা পুলিশ লাইসেন্স কার্ড লাগানো।
চারদিকে এমন অবস্থা দেখে চারপাশটা তার কাছে আধারের মতো লাগছিলো।পাশের একটা গেট থেকে দেখে একটা উলঙ্গ মেয়েকে কয়েকজন ধরে আবার নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।চারুর বুঝতে বাকি রইলো না, মেয়েটাকে এখানে পাচার করা হয়েছে।
-
এক দৌড়ে চারু বাইরে বেড়িয়ে গাড়িতে উঠে পড়লো।গাড়িটা আর সেখানে এক মুহুর্ত দাড়ালো না।সোজা বাসার সামনে থেমে গেলো।
গাড়ি থেকে চারু নেমে দৌড়ে রুমে চলে গেলো।সোহান বুঝতে পেরেছে চারু সবটুকুই বুঝে নিয়েছে।সে জানতো চারুকে পুরো বোঝানোর দরকার নেই।
সেজন্য চারুকে শুধু পতিতালয়ের কেনাবেচার জাইগাটাই দেখিয়েছে।আসল ভোগের জাইগাটা তাকে দেখাই নি।
.
রাতে দুজনেই ছাদে বসে রয়েছে।পাশাপাশি বসে দুজনেই কফি হাতে নিয়ে তাদের সামনে থাকা চাদটা দেখছে।পাশ থেকে কেউ একজন বলে উঠলো,,
---ভাইয়া আজকালেও মেয়েরা এতো নির্যাতিত?
---এটাই সমাজের সবচেয়ে বড় সমস্যা।যেটার বিরুদ্ধে রুখে দাড়ানোর জন্য কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়না।
---ভাইয়া একটা কথা বলবো?
---হ্যা বলো?
---আপনি এই পেশাই কত দিন আছেন?
---প্রায় ১০ বছর।
---আপনি তো অনেক মেয়েকে সেখানে পাঠান।কখনো কারো প্রতি আপনার আপনার মায়া লাগেনি?
কথাটা শুনে সোহান কিছুক্ষন নিরব রইলো।
---একটা মেয়ে যদি তার নিজের জীবন নিজে থেকেই বিপদের দিকে ঠেলে দেই।তখন আমার কিছু করার থাকেনা।যদি কেউ কখনো আমাকে বলতো,ভাইয়া আমি এসব পথে যাবোনা।তাহলে তাকে তক্ষুনি ছেড়ে দিতাম।কিন্তু জানিনা এসব মেয়েরা কখনো সে পথ থেকে আর ফিরে আসতে চাইনা।
---ভাইয়া এটার জন্য কি শুধু আমাদেরকেই দায়ী করলে ঠিক হবে?
---চারু তোমাকে একটা প্রশ্ন করবো?
---হ্যা করেন।
---যখন তুমি আমার দেওয়া পোশাক পড়ে বের হয়েছিলে।তখন লোকজনের তোমার প্রতি কেমন আকর্ষন হয়েছিলো?
---আমি যখন চারপাশটা দেখছিলাম।সবাই আমাকে বারবার দেখছিলো।
---মেয়েদের এই একটাই সমস্যা যেটা তারা তাদের পোশাকের মধ্যে প্রচার করে বেড়াই।অনেকে বলে তাহলে শিশুরা কেন নির্যাতিত হয়?
আসলে এই কথাটার কোনো ভিত্তিই নেই।কারন খারাপ কাজ মানে খারাপ।যেটা তুমি ওদেরকে দেখাচ্ছো সেটা তারা তোমার থেকে নিতে না পেরে শিশুদের উপর প্রভাব ফেলছে।
---সবাই তাদের নিয়তির শিকার।(একটা ঘন নিষ্শাষ নিয়ে চারু)
---তো আজকের কাহিনীর পর তোমার ডিশিসন কি হলো?
---সেটা এখনো ভাবিনি।আচ্ছা আমাকে আর কতোদিন থাকতে হবে এখানে?
কথাটা শুনে সোহান কিছুটা গম্ভির হয়ে গেলো।তার ভিতর কি চলছে সেটা সে নিজেও বুজতে পারছে না।
মেয়েটাকে সে তার কথাটা বোঝাতে পারছে না।সোহান চারুর পাশে গিয়ে চারুর হাতটা ধরে,,
---চারু আকাশের ওই চাদটা দেখছো?
---জি।(কিছুটা ভিত আর চমকে গিয়ে)
---এই চাদকেই আমরা রাতের সবচেয়ে সোন্দয্য ভাবি।কিন্তু এই চাদের সুন্দর প্রতিভাটা কোথা থেকে আসে?সেটা আসে সুর্য আছে সেটার জন্য।আর ঠিক তেমনি একটা মানুষের জন্য দরকার আরেকটা হাত।যেটা তাকে বাচতে শেখাবে আর তার হাতদুটো সবসময় ধরে রাখবে।
কথাটাগুলো চারুর ভিতরে শিহরিত হতে শুরু করলো।চারুর চোখে চোখ রেখে দাড়িয়ে পড়লো সোহান।সে চারুর চোখে কিছু একটা লক্ষ তাকালো।হইতো আজ দুজনেরই কিছু একটা ফিল হচ্ছে।
চারুর হাতদুটো উচু করে,,
---এই হাতদুটো দেখছো ?এটা তুমি তোমার ইচ্ছাতে সবদিকেই নিতে পারবে।ঠিক তেমনি সেখানে যাওয়াটা তোমার উপর নির্ভর করবে।শুধু একটু বুদ্ধি দিয়ে ভেবে দেখো।
কথাটা বলেই পাশ থেকে সোহান হেটে হেটে চলে গেলো।
.
চলবে,,
part :- 8
কথাগুলো চারুর কানে বাজতে লাগলো।সে কিভাবে বোঝাবে, সোহান আমি শুধু তোমাকেই চাই।
রাতের ঠান্ডা হাওয়াটা তার শরীরে লাগছে।শরীরটা তার বারবার কাপুনি দিয়ে উঠছে।
হাতদুটো গুটিয়ে সে রুমে গিয়ে বালিশে মাথা রাখলো।আজকে তাকে আর বসে থাকলে হবেনা?এ কদিনে সে সোহানকে যে ভালোবেসে ফেলেছে তার ভালোবাসা কথাগুলো কালকে তাকে জানাতেই হবে।
রাতটা গভির হয়ে এসেছে।চারু ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পড়েছে।আর সোহান চুপটি করে সোফাই ঘুমিয়ে রয়েছে।রাতের এই সময়গুলো তার সোফাতেই কাটাতে ভালোলাগে।
-
সকাল হতেই চারু ঘুম থেকে উঠে পড়লো।চুপিচুপি ফ্রেশ হয়ে এসে চারপাশে উকি দিয়ে সে সোহানকে খুজতে লাগলো।কিন্তু তাকে যে পাওয়াই যাচ্ছে না।তাই চুপিচুপি চারু সোহানের রুমে গিয়ে উকি দিলো।
রুমের ভিতর তাকিয়ে দেখলো কেউ নেই।সে চুপিচুপি রুমের ভিতর প্রবেশ করলো।রুমে যেতেই সে বেশ অবাক হলো।বাহ রুমটা তো বেশ সুন্দর।
চারপাশটা ঘুরে ঘুরে দেখতে দেখতে হটাৎ তার টেবিলের উপর নজর পড়লো।টেবিলের উপর রাখা আছে বিভিন্ন ধরনের বই আর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ন কিছু কাগজ।চারু সেখান থেকে একটা কাগজ উঠাতে খেয়াল করলো সেটা তার নামেই রেজিস্টার আছে।কথাটা ভাবতেই খেয়াল হলো সেদিনের সেই অপারেশনের কথা।
কাগজটা খুলে সে বেশ অবাক হলো।কাগজে তো অন্যকিছু দেখাচ্ছে।তাহলে সোহান যে বললো,,তাকে একটা মেডিসিন দেওয়া হবে?
কাগজটা ভালো করে পড়ে সে বিষ্শাশ করতে পারছিলো না এই রিপোর্টটা সত্য?তাহলে সোহান আগে থেকেই জানতো সে একদম ঠিকঠাক আছে।
পাশ থেকে একটা আওয়াজ পেতেই সে দৌড়ে রুম থেকে বের হয়ে এলো।বেলকনিতে দাড়িয়ে সে খুশিতে হাসতে লাগলো।সে যে কতোটা খুশি ছিলো?সেটা কাউকেই বোঝাতে পারছে না।
এখন তার নিজেকে বলতে ইচ্ছে করছিলো,,
---চারু তুই পারবি।আজ তোকে কথাটা বলতেই হবে।
রুমে এসে সুন্দর করে একটা চিঠি লিখলো।সে এখন বুঝতে পারছে সোহান কেন তাকে কখনো একলা ছাড়েনি।
চিঠিটা হাতে নিয়ে বাইরে যেতেই দেখে সোহান দাড়িয়ে রয়েছে।সে এক দৌড়ে গিয়ে সোহানের বুকে ঝাপিয়ে পড়লো।
---আরে আরে চারু তুমি এসব কি করছো?(চারুকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে)
---আমার জড়িয়ে ধরতে ইচ্ছা করেছে তাই ধরেছি।আপনি একদম চুপচাপ দাড়িয়ে থাকুন।
---কিন্তু এভাবে ঝাপিয়ে পড়ার কারনটাতো বলবে?
---এর আগে আপনিও আমাকে অনেক বার জড়িয়ে ধরেছিলেন।তখন আমি কিছুই বলেনি তাই এখন আপনি চুপচাপ দাড়িয়ে থাকুন।
সোহান চুপ করে দাড়িয়ে একটু রোমান্টিকভাবে চারুর কোমরে আলতো করে ছুয়ে দিলো।চারুকে দেখলেই শুধু তার এই একটাই দুষ্টুমি
মাথাই ভর করে।
চারু একটু নড়েচড়ে উঠলো।সে বুঝতে পারছে এটা সোহান ইচ্ছা করে তার সাথে মজা করছে।বেয়াদব ছেলেটা একটুও ফিলিংস বোঝেনা।সবসময় শুধু তার সাথে দুষ্টামি করে।
---এই শুনছেন?
---হ্যা বলো?
---কোমর থেকে একটু হাতটা সরানো যাবে?
---ইয়ে মানে?(তারাতারি করে হাতটা সড়িয়ে)
---একটা কথা বলার আছে?
---কথা বলবা নাকি কিছু করবে?যেরকম জড়িয়ে রেখেছো, তাতে আমারতো কিছু শুনতে ইচ্ছে করছে না।একটু ঘুমানোর শখ জাগছে।
চারু সোহানকে এক ধাক্কাই সড়িয়ে দিয়ে লজ্জাই মুখটা লুকিয়ে নিলো।
---একটু একটু ফিলিংস হচ্ছে।যাইহোক চারু তুমি কিছু একটা বলতে চাইছিলে?
---হ্যা।আচ্ছা আমি যে আপনাকে ছেড়ে যাচ্ছি।এতে আপনার কষ্ট হবেনা?(মুখটা নিচু করে)
---চারু মুখ থেকে কখনো এমন কথা বের করবা না।তুমি কখনো আমার থেকে যাবেই না।
---কেন?
---আমিতো তোমার সাথেই সবসময় থাকবো।
---ভাইয়া আপনাকে একটা কথা বলার আছে?
---হ্যা বলো।
চারু পিছন থেকে যেই চিঠিটা বের করতে যাবে?ঠিক তখনি সোহানের ফোন বেজে উঠলো।সোহান ফোন হাতে নিয়ে খেয়াল করলো বাসা থেকে বাবা ফোন করেছে।চারু চোখটা বন্ধ করে চিঠিটা সোহানের সামনে রাখতেই সে ফোনটা কানে নিয়ে পিছন ফিরে একটা দুরে চলে গেলো।
অনেক্ষন হতে চারু কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে চোখ খুলে তাকিয়ে দেখে সোহান তার পাশে নেই।খেয়াল করলো একটু দূরে সোহান কার সাথে যেন কথা বলছে।
চারুর মনটা ভিষন খারাপ হয়ে গেলো।চিঠিটা তার আর দেওয়া হবেনা দেখে চিঠিটা লুকিয়ে নিলো।
বেশ অভিমানের দৃষ্টিতে সে সোহানের দিকে তাকিয়ে রইলো।কিছুক্ষন পর সোহান কথা শেষ করে খেয়াল করলো চারু তার দিকে অন্যরকম ভাবে তাকিয়ে রয়েছে।চারুর পাশে এসে,,
---কিছু মনে করোনা।বাসা থেকে বাবা ফোন করেছিলো।
---কি জন্য?
---সবসময় বাসার বাইরে থাকি।সেজন্য বাবা আমার বিয়ের জন্য মেয়ে দেখতে চাইছে।(মুচকি হেসে)
---বাহ তাহলে তো আপনাকে শুভেচ্ছা জানাতেই হচ্ছে।
---হুম।চারু তুমি কিছু একটা বলতে চেয়েছিলে?
---কই নাতো।
---মিথ্যা বলবে না?
---যেটা বলতে এসেছিলাম সেটা এখন মনে নেই।পরে মনে পড়লে তখন জানাবো।(মুখ চাপা দিয়ে)
---চারু তুমিও না?একদম বোকা একটা মেয়ে।
---হ্যা পাগল ছেলের বোকা পাগলি।(আসতে আসতে)
---পাগল বললে মনে হলো?
---আরে বললাম যে, খাবার সময় হয়ে গিয়েছে।চলুন আপনার খাবারটা বেড়ে দিতে হবেতো।
সোহান চারুর কথাই বোকা হয়ে সেখান থেকে চলে গেলো।
চারু চুপিচুপি হাসছে।ছেলেটা বুদ্ধিমান হলেও একসের পাগল।একটা কথাও একটু ভালো করে শুনেনা।
চারু মনে মনে ভাবছে,,সোহানকে তার বাবা বিয়ের চাপ দিচ্ছে।তাহলে সোহান অবশ্যই একটু চাপে থাকবে।এই সুযোগেই আমি সোহানকে আমার করে নিবো।যেভাবেই হোক সোহানকে আমার মনের কথা জানাতেই হবে।কারন আমি জানি,,ছেলেটা মেয়েদের থেকেও লজ্জা বেশী পায়।তাই সে বুড়া হয়ে গেলেও আমাকে তার ভালোবাসার কথাটা বলবে না।
-
-
অনেক্ষন ধরে হোটেলে একা একা বসে রয়েছে।সেই যে কখন সোহান তাকে এখানে বসিয়ে রেখে গিয়েছে।চারপাশের সবাই তারদিকে তাকাচ্ছে।তার খুব ভয় করছে।এখানে সোহান তাকে এনেছে কারো সাথে দেখা করার জন্য।
পানির বোতল হাতে নিতেই খেয়াল করলো সোহান তার পাশে বসলো।
---ওই আপনি তো বেশ অদ্ভুত?আমাকে একা রেখে কোথায় চলে গিয়েছিলেন?
---চারু আমি দুঃখিত।কিন্তু একটা কাজের জন্য বাইরে গিয়েছিলাম।(চারদিকে তাকিয়ে)
---এভাবে হবে না?মাফ চান।
---ঠিক আ আ আ....
সোহানের কথা থেমে যেতেই চারু অবাক হয়ে সোহানের চোখের দৃষ্টিটা লক্ষ্য করলো।বাইরের দিকে তাকাতেই খেয়াল হলো একটা ছোট্ট ৪ বছরের বাচ্চা তাদের দিকেই এগিয়ে আসছে।বাচ্চাটা এগিয়ে আসতেই সোহান দৌড়ে গিয়ে বাচ্চাটিকে কোলে তুলে নিলো।সোহানে এর কোলে বাচ্চা দেখে চারু অবাক হয়ে গেলো।
সোহান চারুর পাশে এসে বাচ্চাটিকে কোলে নিয়ে বসলো।সোহানের মুখে ফুটে উঠেছে ভালোবাসার হাসি।যেটা চারুকে চিন্তার অঘোরে ফেলে দিলো।হটাৎ পাশ থেকে শুনছো...কথাটা শুনে চারু মুখ তুলে তাকাতেই দেখে একটা যুবতী মেয়ে।তবে মেয়েটিকে দেখেই বোঝা যাচ্ছে মেয়েটি বিবাহিত।
চারুর আর বুঝতে বাকি রইলো না এদের কাহীনিটা।নিজের অজান্তেই তার চোখ দিয়ে জল বেড়িয়ে এলো।সোহান তার সাথে প্রতারনা করেছে।সে তাকে মিথ্যা বলেছে।নিজের চোখের জলটা লুকিয়ে নিলো।
---চারু তোমাকে ওদের জন্যই বসিয়ে রেখেছিলাম।এই যে এটি হলো আমার ছোট্ট খোকা আর ও হলো রিতু।
রিতু হাতটা বাড়াতেই চারুর বুকটা ধক করে উঠলো।নিজের ভালোবাসাটা অন্যর কাছে এটা ভাবতেই হাতদুটো কাপতে লাগলো।পরিচিত হওয়ার পর খেয়াল করলো সোহান শুধু রিতুর সাথেই কথা বলে যাচ্ছে।একটা আহাকার তার ভিতর কাজ করতে শুরু করলো।কান্নাটা আর তার পক্ষে চেপে রাখা সম্ভব হচ্ছিলো না।সোহানকে একটু ওয়াশরুমে যাবার কথা বলে হোটেল থেকে বেড়িয়ে এলো।
চুপ করে একটা ফাকা যাইগা দিয়ে সে হাটছে।টপটপ করে তার চোখ থেকে জল পড়ছে।নিজেকে তার খুব অসহায় মনে হচ্ছিলো।গরীব বলে সোহান তার সাথে এতোটা নোংরামি করতে পারলো?একটা মেয়েকে বিয়ে করে আরেকটা মেয়ের দিকে লালসার হাত বাড়িয়ে দিলো?
.
রাস্তার লোকজন হইতো তাকে পাগল ভাবছে।কিন্তু চারু ঠিক করে নিয়েছে।আর সে এখানে থাকবে না।একটা প্রতারকের সাথে সে কিছুতেই থাকতে পারবে না।
কান্না করতে করতে সে নিজের বাড়িতে ফিরে যাবার জন্য রওনা দিতে আরম্ভ করলো।
.
চলবে,,
https://tinyurl.com/yuk48vyd
0 Post a Comment:
Post a Comment