গল্প- ভয়ংকর_ধর্ষণ ( পর্ব-২)
লেখক- Riaz Raj
------------------
রোকনের মা তখনি জ্ঞান হারায়। রিয়াজ বমি করতে গিয়েও থেমে যায়। এইটা কিভাবে হলো? আসামী খুঁজতে এসে আসামীর খুনিকে খোজার পথ বের হয়ে এলো। ধর্ষণ যদি রোকন করে থাকে,তবে তাকে কে মারলো? এতক্ষণ সব ঠিকঠাক ছিলো। এখন বিশাল বড় রহস্যের কারণ কি হতে পারে?
রিয়াজ ফিরে এলো বাসায়। বাসায় আসার পরই রিয়াজের মা জিজ্ঞেস করলো,
- আজ এতো অস্থিরতায় দেখা যাচ্ছে কেনো?
- আর বলোনা মা। অনেক ডিপ্রেশনে আছি। যাইহোক, আমি সামলে নিবো। খাবারের কি কি আছে।
- আলু ভর্তা আর ডাল।
- আম্মু, ভালো খাবার থাকতে প্রতিদিন এসব কি রান্না করো তুমি? ফ্রিজে মাংস তো আছে তাইনা?
- পরশু বাসায় মেহমান আসবে। তোর জন্য মেয়ে দেখছি আমি। এখন এসব রান্না না করে সেদিন রান্না করি। তাহলে তো আর আউট টাকা খরচ হবেনা।
- তুমি একজন ইন্সপেক্টরের মা। এতো হিসেব করলে হয় বলো?
- যেখানে ভর্তা দিয়ে আমাদের চলে যাবে,সেখানে মাংস রান্না করে টাকা উড়ানোর মানে হয়?
- হা হা হা,তুমিও না? এইজন্য বাবা তোমাকে বকা দিতো ভালো ভাবে।
- তাই তো এখন কেও নেই। উনি সব উজাড় করে দিতো। দেখ, তোর বাবার মৃত্যুর পর কেও এখন আমাদের খবরটাও নেয়না। সবাই স্বার্থের পূজারি।
- আচ্ছা ওয়েট,তুমি কি বললে একটু আগে? ভর্তা দিয়ে চললে,মাংস কেনো রান্না করবা। অর্থাৎ কাজ একই,চালাচ্ছো দুইভাবে।যেভাবে লাভ হয় আরকি।
- এইতো,তোর মগজে ঢুকেছে।
- ইয়েস,আম্মু তুমি তো আমার ডিপ্রেশন দূর করে দিলে।
- অমা,সেটা কিভাবে।
- পরে জানাচ্ছি। রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আসি।ডাল আর ভর্তা রেডি করো।
রিয়াজ চলে আসে নিজের রুমে। ভাবতে লাগলো, রোকনের খুনি কে হতে পারে। রোকন নিশ্চয় কাজটা একা করেনি। অর্থাৎ রোকনের সাথে আরো কয়েকজন আছেই।ফাতেমার পোস্টমর্টেম রিপোর্ট আসেনি এখনো। এতক্ষণে আসার কথা। কিন্তু ওর বডি দেখে এইটুকু বুঝা যায়,ধর্ষণকারী আরো অনেকে।জড়িত আছে আরো অপরাধী। তারা হয়তো রোকনকে খুন করে দিয়েছে। অর্থাৎ রোকনকে খুন করলে,তারা ধরা পড়বেনা।কারণ রোকনকে সন্দেহ আমরা করবো এইটা তারা আগেই জানতো। রোকন মৃত অর্থাৎ জিজ্ঞাসাবাদ করার কেও নেই। কিন্তু বাকিরা কারা। ওর বন্ধুরা তো রিয়াজের সাথেই ছিলো। তারাও খুনি না। তাহলে খুনি কে। এখন ফাতেমার খুনিকে বের করতে হলে রোকনের খুনিকে বের করা লাগবে। ডাল আর ভর্তার মতো, যেটায় লাভ সেটাই আমরা আগে দেখি। রোকনের মৃত্যুতে তারা বেচে যাবে,তাই রোকন খুন। ভালো ফান্দি খুঁজেছে ওরা।এইবার আমাকে খুঁজতে হবে।
রিয়াজ ফ্রেশ হয়ে নিছে আসে।খাবার খেতে বসে ওর আম্মুর সাথে। এর মধ্যেই রিয়াজের ফোন বেজে উঠে।রিসিভ করে রিয়াজ হ্যালো বলার পরই ওপাশ থেকে মেয়েলী কন্ঠে কেও বলল,
- আমি খুন হয়েছি।আমি প্রতিশোধ নিবো। তুই তোর জায়গায় অটল থাক। নয়তো ঝুঁকিতে পড়বি।
- মানে? কে আপনি?
কল কেটে যায়। রিয়াজ আবার সেই নাম্বারে কল দেয়। কিন্তু কল ঢুকেনা। খাবার টেবিল থেকে উঠে রিয়াজ তার আম্মুকে বলল,
- আমি থানায় যাচ্ছি একটু। তুমি খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ো।
- আরেহ,খাবারটা তো শেষ করে যা।আর এতো রাতে কিসের কাজ পড়লো তোর।
- পরে বলি? আর খাবার ঢেকে রাখো।এসে খেয়ে নিবো।
বলেই রিয়াজ বাসা থেকে বের হলো। গাড়ি স্টার্ট দিয়ে ছুটতে লাগলো থানার দিকে। ড্রাইভিং অবস্থায় কল দেয় সাইবার-৭১ এ। ওখানের ইয়াসিন আরাফাত কল রিসিভ করে বললেন?
- জ্বী স্যার। বলুন কিভাবে সাহায্য করতে পারি।
- আমি আপনাকে একটা নাম্বার এস এম এস করেছি। দ্রুত এই নাম্বারের লোকেশন সহ সকল ইনফরমেশন চাই। এক্ষুনি।
- জ্বী স্যার,আমি জানাচ্ছি আপনাকে।
কল কেটে রিয়াজ হসপিটাল কল দেয়। ডক্টর কল রিসিভ করতেই রিয়াজ বলল,
- ফাতেমা নামক মেয়েটির পোস্টমর্টেম রিপোর্ট এখনো আসেনি কেনো। এতো সময় তো লাগার কথা নয়?
- সরি স্যার। আসলে লাশের এখনো পোস্টমর্টেম করা হয়নি।
- হোয়াট,আজ কতদিন হয়েছে লাশ পাঠানো হয়েছে। এখনো করা হয়নি কেনো?
- যেখানে লাশ খুঁজে পাচ্ছিনা আমরা। সেখানে পোস্টমর্টেম কিভাবে করবো।
- লাশ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা মানে? আপনাদের হেফাজতেই তো ছিলো।
-জ্বী স্যার,সব ঠিকঠাক ছিলো। কিন্তু পোস্টমর্টেম করার সময় দেখি, এইটা ফাতেমার লাশ নয়। অন্য একটি মেয়ের লাশ। যার পোস্টমর্টেম অনেক আগেই করা হয়েছে। আর সব চেয়ে বড় কথা হচ্ছে, এই লাশ আরো ৪ বছর আগের লাশ। যার পরিচিত কেও এখনো লাশ নিতে আসেনি।
- আমি হসপিটাল আসতেছি। অপেক্ষা করুন।
রিয়াজ কল কেটে গাড়ি ঘুরিয়ে নেয়। হসপিটালের উদ্দেশ্যে রওনা দেয় রিয়াজ। কিছুক্ষণ পর হসপিটাল গিয়ে দেখে ডক্টরা মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে। রিয়াজ বলল," আমাকে মর্গে নিয়ে যান"। ডক্টররা রিয়াজকে মর্গে নিয়ে যায়। রিয়াজ মর্গে গিয়ে দেখে ফাতেমার লাশের জায়গায় অন্য একটি লাশ। এতো সিকিউরিটি থাকতেও লাশ কিভাবে চুরি হলো তা অজানা। সিসি টিভি ফুটেজেও নাকি কোনো তথ্য নেই। রিয়াজকে ডক্টর বলল,
- আমরা বুঝতে পারছিনা স্যার কিভাবে কি হলো। একটা লাশ কিভাবে হারিয়ে যেতে পারে। আর সেই জায়গায় এই অদ্ভুত লাশ কিভাবে গেলো।
- হসপিটাল ছেড়ে আপনারা সিকিউরিটি গার্ডে দাঁড়ান। কে বলেছে ডক্টর হতে,যেখানে লাশের হেফাজত করা হয়না।
- আমরা আসলেই সরি স্যার।
- এই লাশটা যেনো কার বললেন?
- সামিয়া নামের একটি মেয়ের। গত চারবছর ধরে এখানে আছে। ওর কোনো পরিচিত কোক আসেনি।
- হসপিটাল দিয়ে গিয়েছিলো কে?
- তাও এক পথচারী।
- তার কোনো পরিচয় নেই?
- না স্যার, উনি এসে এই বডি দেয়। আমরা চিকিৎসা করতে যাই। আর তখনি মেয়েটি মারা যায়। হসপিটাল আনতে দেরি করেছিলো। আমরা বের হয়ে দেখি,লোকটা নেই।
- আপনারা আসলেই সিকিউরিটি গার্ডে জব করা উচিৎ। প্রতিটা পদেই ভুল।
- সরি স্যার।
- সরুন আমার চোখের সামনে থেকে। একা থাকতে দিন।
- স্যার, লাশঘরে থাকবেন নাকি।
- হ্যা, আপনারা পারলেন না,অন্তত আমি লাশ পাহারা দেই? যান সবাই।
প্রচণ্ড রেগে যায় রিয়াজ। রিয়াজের ধমকে সবাই বের হয়ে গেলো। ফাতেমার লাশ গায়েব হবে কিভাবে। আর একই জায়গায় এই সামিয়ার লাশ এসেছে কিভাবে। পোস্টমর্টেম রিপোর্ট না ফেলে ফাতেমার খুনিকে বের করবে কিভাবে। রোকনও খুন। আর তো কোনো ক্লু নেই। চিন্তিত হয়ে যায় রিয়াজ। এর মধ্যে রিয়াজের ফোনে রিং বেজে উঠে। রিসিভ করতেই সাইবার-৭১ থেকে ইয়াসিন আরাফাত বললেন,
- স্যার,আপনার দেওয়া নাম্বারটি গত চার বছর থেকে বন্ধ। এই নাম্বারের কোনো সিম নেই একটিভ।
- মানে? ১ ঘন্টা আগেই কল দিয়েছিলো আমাকে। এই নাম্বার থেকেই।
- না স্যার। ৪ বছর এইটা অফ।
- ইউজার কারীর নাম কি।
- তার নাম সামিয়া। গত ৪ বছর থেকে সিম বন্ধ করে রেখেছে।
রিয়াজ এক মুহূর্তের জন্য স্তব্ধ হয়ে যায়। ফোনটা হাত থেকে ফেলে দেয়। সামিয়া বলতে এই লাশের কথা বলছে নাতো? এই লাশ তো ৪ বছর ধরেই এখানে। তবে ১ ঘন্টা আগে কিভাবে কল দিলো। ভাবতে ভাবতে হটাৎ সামিয়া রিয়াজের হাত ঝাপটে ধরে। রিয়াজ পিছু ফিরে তাকিয়ে দেখে সামিয়া বড় বড় চোখ করে রিয়াজের দিকে তাকিয়ে আছে।
চলবে....?
লেখক- Riaz Raj
[ কোথাও সামিয়ার সাথে এই ঝামেলার কোনো সূত্রপাত নেই তো? ফাতেমার লাশ গায়েব,রোকন খুন,খুনি কে তা অজানা। এর উপর এই ৪ বছর আগের লাশ। তাও ১ ঘন্টা আগের কল। যে সিম ৪ বছর ধরেই বন্ধ,সে সিম থেকে কিভাবে কল আসে। কি হচ্ছে এসব? কি মনে হচ্ছে? রিভিউ দিন গ্রুপে। আর কেমন হয়েছে,তা কমেন্টে জানান।]
৩য় পর্ব লিংক 👇
https//wwwbonkordorshgolop.com
0 Post a Comment:
Post a Comment