ভয়ংকর_ধর্ষণ ( পর্ব-৩)

 গল্প- ভয়ংকর_ধর্ষণ ( পর্ব-৩)


লেখক- Riaz Raj

------------------

এই লাশ তো ৪ বছর ধরেই এখানে। তবে ১ ঘন্টা আগে কিভাবে কল দিলো। ভাবতে ভাবতে হটাৎ সামিয়া রিয়াজের হাত ঝাপটে ধরে। রিয়াজ পিছু ফিরে তাকিয়ে দেখে সামিয়া বড় বড় চোখ করে রিয়াজের দিকে তাকিয়ে আছে। 


রিয়াজ ভয় পেয়ে পিছনে লাফ দেয়। লাশ সহ

রিয়াজের সাথে ফ্লোরে পড়ে যায়। এক অদ্ভুত ঘটনা। লাশ এখনো রিয়াজের হাত ধরে আছে। অনেক শক্ত করে ধরে আছে হাত। রিয়াজ ফ্লোরে পড়ে পিছু ছুটতে থাকে । লাশটাও ছেচকি খেতে খেতে রিয়াজের সাথে

যাচ্ছে। অবশেষে রিয়াজ লাশের হাতে প্রচুর শক্তি দিয়ে লাথি মারে। আর সঙ্গে সঙ্গেই লাশ রিয়াজের হাত ছেড়ে দেয়। রিয়াজ দৌড়ে লাশঘর থেকে বের হয়ে যায়। রিয়াজকে এমন হয়রান হতে দেখে ডক্টর ইয়াসিন রিয়াজের কাছে দৌড়ে আসে। রিয়াজ প্রচন্ড ঘাবড়ে আছে। ডক্টর সাহেবকে রিয়াজ বললো,

- ডক্টর সাহেব, লাশঘরে কোন ঝামেলা আছে। আপনি জলদি আমার সঙ্গে চলুন।

- কি ঝামেলা হয়েছে, আমাকে খুলে বলুন।

- আপনি আগে চলুন তো।

কথাটা রিয়াজ অনেক রেগে গিয়ে বললেন। ডক্টর সাহেব ভয় পেয়ে যান রিয়াজের কথা শুনে । রিয়াজের ধমকের সাথে ডক্টর সাহেব নিজেও, লাশ ঘরের দিকে ছুটে যেতে লাগলেন। তাদের সঙ্গে হসপিটালের আরো কয়েকজন নার্সও দৌড়ে আসে।রিয়াজ সহ ডক্টর সাহেব সাথে নার্সরা লাশঘরে এসে উপস্থিত হয়। ভিতরে প্রবেশ করতেই রিয়াজ থমকে যায়। এতক্ষণ ঘামে মাখামাখি করছিলো রিয়াজ। এইবার ঘামের প্রভাবে যেনো গোসল সেরে ফেললো। ডক্টর সাহেব রিয়াজকে জিজ্ঞেস করলেন," কই,কি হয়েছে এখানে?"।  রিয়াজ কোনো উত্তর দিতে পারেনি। দিতেও ব্যর্থ হয়। কারণ সামিয়ার লাশ ফ্লোরে নেই। লাশ আগের মতোই সিটে শুয়ে আছে। উপরে আগের মতো সাদা কাঁপন পেছানো। রিয়াজ আরো ডিপ্রেশনে চলে যায়। এই মাত্র লাশটি রিয়াজের হাত ধরেছিলো। তার সাথে গড়াগড়ি করে ফ্লোরে নেমেছে। প্রায় দরজার কাছাকাছি এসে গিয়েছিলো। তাহলে আবার সব ঠিকঠাক হলো কিভাবে।  ডক্টরকে আর কিছু না বলেই রিয়াজ লাশঘর ত্যাগ করে। এই অনুভূতি প্রকাশ করার মতো না। প্রকাশ করা মানে নিজেকে পাগল নামে উপাধি দেওয়া। যা রিয়াজ মোটেও করতে যাচ্ছে না। হসপিটাল থেকে বের হয়ে রিয়াজ সোজা গাড়িতে বসে। কি হলো এইটা। এতো বড় অসম্ভব একটা কুকর্মা ঘটে গেলো। যার উত্তরের অস্তিত্ব খোঁজে পাওয়া দুষ্কর।  আবার এক দিক থেকে উত্তর পাওয়া যায়। যে লাশ, অর্থাৎ ৪ বছরের পুরনো লাশ যদি নিজের চোখ মেলতে পারে। ৪ বছর পুরনো লাশ যদি একটা জীবন্ত মানুষের হাত ধরতে পারে। ৪ বছর পুরনো লাশ যদি এক ঘন্টা কল দিতে পারে। ৪ বছর পুরনো লাশ যদি জীবিত হতে পারে। তবে শুয়া থেকে উঠে সিটে কেনো যেতে পারবেনা। এখন সিটে যাওয়ার উত্তরটা নাহয় বের হলো। কিন্তু বাকি প্রশ্নের উত্তর?  তা কোথায় পাবে। যদিও সাথে আরো হাজারো প্রশ্ন বাকির লিষ্টে আছে। যেমন এই লাশের সাথে ফাতেমার সম্পর্ক কি। আর কে এই সামিয়া। এতো বছর পর কেনো কান্ড শুরু করে দিলো। কেনো সে ফিরে এলো। তার সাথে এমন ব্যবহার কেনো করলো। তার সাথেও কি কোনো সম্পর্ক আছে? থাকলেও সেটা কি? রিয়াজকে কেনো এই মামলায় জড়িত হতে হলো? কত গুলো প্রশ্ন জমা হলো। সিম্পল ধর্ষণের একটা মামলা থেকে ৪ বছর পিছিয়ে গেলো। কি হয়েছিলো ৪ বছর আগে? রহস্য! রহস্যের উত্তর খোজাটাও একটা রহস্য হয়ে যাচ্ছে। যত এগিয়ে যাচ্ছে রিয়াজ,ততই কঠিন হচ্ছে সব কিছু।এর শেষ কোথায়..? 


ভাবতে ভাবতে রিয়াজ গাড়ি স্টার্ট করে। এখন সে কি করবে,তার কূল কিনারা কিছুই খুঁজে পাচ্ছে না। যাই করতে যায়,তাতেই রহস্যের জাল ঝাপটে আসে। একটু বিশ্রাম নেওয়া দরকার। ঠান্ডা মাথায় ভাবতে হবে।

রিয়াজ ফিরতে যাচ্ছে বাড়িতে। যাওয়ার কথা থানায়। কলের রহস্য বের করতে গিয়ে অকাল মৃত্যুর ইঙ্গিত। ভাবনার মাঝে হটাৎ রিয়াজের চোখ আটকে যায় রাস্তার পাশে।সাথে সাথেই কষিয়ে ব্রেক করে রিয়াজ। রিয়াজ এখন নির্জন একটি পথে। শহর থেকে তার বাসায় যেতে যে দুরুত্ব, তার মাঝে এই নির্জন এলাকা। দুই পাশে ইয়া বড় বড় গাছ। জঙ্গলের মতো হয়ে আছে সব কিছু। গাড়ির লাইটের আলোয় রিয়াজ দেখতে পায়,রাস্তার পাশে গাছের সাথে কিছু একটা ঝুলে আছে। এমতাবস্থায় যদি কিছু থাকে,অবশ্যই কোনো ভূত প্রেত হবে। হয়তো কোনো লাশ ঝুলে আছে। রিয়াজ এমনি ভেবে নিয়েছে। কারণ আজকাল নাকি এরকম ঘটনা প্রায় ঘটে। রিয়াজ গাড়ি থেকে নামতে মোটেও রাজি নন। এইটা হয়তো অশরীরীর কোনো প্লেন। রিয়াজ গাড়ি থেকে নামলেই হয়তো দেখবে তার উপর এট্যাক করেছে সে। রিয়াজ আবার গাড়ি স্টার্ট করার সিদ্ধান্ত নেয়। আর তখনি চোখ যায় লুকিং গ্লাসের দিকে। রিয়াজ পিছনের সিটে সামিয়া বসে আছে। নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছেনা রিয়াজ। সামিয়া ৪ বছর আগে মারা গেছে। এখন ৪ বছর পর ওর পিছু কেনো নিলো। ভয় পেয়ে রিয়াজ দরজা খোলেই দৌড় দিতে লাগলো। আর তখনি খেয়াল করে রাস্তার পাশে ঝুলে থাকা সেই বস্তুর উপর। যেমন ভেবেছিলো,একটা লাশ ঝুলে আছে। গলায় দড়ি। অর্থাৎ ফাসি দেয়া লাশ। কিন্তু এইটুকুর মধ্যে থাকলেও হতো। রিয়াজ আরো বেশি অবাক হয়।কারণ ওটা রিয়াজের নিজের লাশ। হতভম্ভ হয়ে রাস্তায় পড়ে যায়। সামনে যদি রিয়াজের লাশ ঝুলে থাকে,তবে সে কে? এক মুহূর্তের জন্য মনে হচ্ছিলো রিয়াজ মৃত। এখন ওর আত্মা ঘুরে বেড়াচ্ছে। আর সামনেই ওর দেহ ঝুলে আছে।অন্য কিছু ভাবার আগেই রিয়াজ আবার দেখে,লাশটা নড়াচড়া করতেছে। হাত পা ধীরে ধীরে নড়ছে। ভয় পেয়ে রিয়াজ আবার নিজের গাড়ির দিকে এগিয়ে আসে। কিন্তু এইবার পিছনের সিটে সামিয়াকে দেখতে পায়নি রিয়াজ। সাহস করে আবার গাড়িতে উঠে রিয়াজ। আর দ্রুত স্টার্ট দিয়ে পালাতে লাগলো।ছুটতে লাগলো নিজের বাড়ির উদ্দেশ্যে। 


বাসায় এসে রিয়াজ নিজের রুমে চলে যায়। রিয়াজের রুমে তার আম্মু, টেবিলে খাবার রেডি করে রেখেছে। রিয়াজ খাবারে মন দিতে পারেনি। কি সব হলো ওর সাথে। এতো অলৌকিক ঘটনা ঘটে কখনো? আসলেই এমন হয়? ভূত প্রের বিশ্বাস করেনা রিয়াজ। এইগুলা শুধুমাত্র গল্পে পড়েছে শুনেছে।  এখন নিজের চোখেই দেখলো সব কিছু। নিজেকে মানতে পারেনা রিয়াজ। একজন পুলিশ ইন্সপেক্টর হয়ে ভূত নিয়ে ভাবতে হচ্ছে? অদ্ভুত পরিস্থিতি, সাথে ঘটনা। 

ভাবতে ভাবতে রিয়াজ বারান্দায় এসে দাঁড়ায়। নিশ্চুপ হয়ে সেই কালো মায়ার মাঝে হারায়। সামিয়া রিয়াজের পিছু কেনো নিলো। ফাতেমার কেস থেকে এই কেসে কোন সংযুক্ত আছে? ৪ বছর পর এই সামিয়া হটাৎ কেনো জাগ্রত হলো? তাও এসেই রিয়াজের দিকে টার্গেট।  এমন এক ঘটনা,যা কাওকে বললেই হেসে উড়িয়ে দিবে। না পারবে কাওকে বলতে,না পারছে সমাধান খুঁজতে। কারো হেল্প নিতে গেলে যদি ওর চাকরীটাও যায়? 


তখনি কারেন্ট চলে যায়। হুট করেই লাইট অফ। রিয়াজ বারান্দায় অন্ধকারে দাঁড়িয়ে আছে। আবার নতুন কিছু হতে যাচ্ছে নাকি। রিয়াজ কান খাড়া করে চারপাশের হাব বুঝার ট্রাই করে । তখনি কানে এলো দরজা খটখট করার শব্দ। নিশ্চয় সামিয়া আবার এসেছে। কোমর থেকে পিস্তল বের করে রিয়াজ এইবার প্রস্তুতি নেয়। ভূতকে গুলি করবে। বাচলে বাচবে,নয়তো মরবে। রিয়াজ বারান্দা থেকে সোজা রুমের দরজার সামনে আসে। অন্ধকারে স্পষ্ট রুম বুঝা যায়না। রিয়াজ শুধু দেখে যাচ্ছে কালো ছায়ার মত কেও রুমে দাড়িয়ে আছে। আর কিছু ভাবেনি রিয়াজ। সোজা গুলি মারতে লাগলো। তখনি রিয়াজের মনে পড়লো,কারেন্ট যাওয়ায় ওর আম্মু চলে আসেনি তো?


চলবে....? 






[ নেক্সট পার্ট পেতে কমেন্ট ] 


[ কে,কে এই সামিয়া। কি তার পরিচয়। ৪ বছর পর ফিরে এলো কেনো? এসে রিয়াজকে ধরেছে কেনো? ফাতেমার খুনিকে বের করতে গিয়ে,সে খুন হবে নাতো? আর গুলি করলো কাকে রিয়াজ? রহস্য রহস্য রহস্য।রিভিউ দিন গ্রুপে আর কেমন হয়েছে,তা কমেন্টে জানান।]




0 Post a Comment:

Post a Comment