গল্প- পিশাচ সুন্দরী ( পর্ব-০৩)
লেখক - রিয়াজ রাজ
-----------------------------------
আমি লাফিয়ে উঠলাম। দেখি তাজকিয়ার চোখ মুখ লাল হয়ে আছে। মুখে রক্তের দাগ। দাত সব কালো হয়ে গেছে। চোখ দুটো সাদা হয়ে গেছে। হাতের নখ বড় বড় হয়ে গেছে। গলার চামড়াগুলো বুড়োদের মতো হয়ে গেছে। আর আমার গলা দিয়ে যে সাউন্ড বের হয়,সেটাও যেনো সাইলেন্ট হয়ে গেছে।
আমার মাথা ঝিম ধরে যায়। পিছন সাইট থেকে ঝিম ঝিম করতে করতে চোখ সহ ঘোলা হতে থাকে। তাজকিয়ার এই রুপ আমি নিতে পারছিনা। ভয় তো পাচ্ছিই,সাথে অলৌকিক ঘটনা। আমার পুরো শরীর অবশ হতে থাকে। তাজকিয়া আমার দিকে ভয়ংকর দৃষ্টিতে তাকিয়েই আছে। লোড নিতে না পারে আমি সেখানেই পড়ে যাই।
- ওও মা!!!
- হা বাবা আমি আছি তো।
আমার বাম পাশে আম্মু,আর ডান পাশে আব্বু। বিছানায় শুয়ে আছি আমি। পায়ের দিকে তাজকিয়া বসে আছে। আমি তড়িঘড়ি করে আম্মুকে জড়িয়ে ধরে বললাম,
- মা,তাজকিয়া মানুষ নয়,ভুত।
ঠাসসসসসসসস। হ্যাঁ, ভুল কিছু আন্দাজ করেন নি। চড়টা আমার গালেই পড়েছে। আমি গাল ধরে হাবলা হয়ে আম্মুর দিকে তাকিয়ে আছি। আম্মু রেগেমেগে বলল,
- পাগল হইলি নাকি। তোর আব্বুকে নিয়ে হাজার ঘটনা বল, কিন্তু আমার তাজকিয়া মাকে নিয়ে একটাও বাজে কথা বলবিনা।
আম্মুর কথা শেষ না হতেই তাজকিয়া হুড়হুড় করে কেদে দিলো। কাদছে আর বলছে," দেখেছেন আন্টি,ও সব সময় এমন করে। আমাকে আর ভালো লাগেনা ওর। কিছুক্ষণ আগে আমার ঘাড় ধরেছে মারার জন্য। পরে দেখি নিজেই অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেছে। এখন উঠেই বলছে আমি ভুত"। তাজকিয়ার কথা শেষ,আব্বুর কথা শুরু," দেখলি তো রিয়াজ। তোর মা টেনেটুনে আমাকেই বাশটা দিলো। কেনো? আমার সম্মন্ধে কিছু বলার আছে নাকি। আমি কি খারাপ কিছু করি? সব তোর দোষ,তোর জন্য তোর মা সুযোগ পায় আমাকে খোচা দেওয়ার জন্য। ধ্যাত"। বলেই আব্বু নাক বাকা করে বের হয়ে যায়। আব্বুর কাহিনি দেখে আম্মুও নাক বাকা করে রুম ত্যাগ করে। ওদের দুজনের কাহিনি দেখে তাজকিয়াও নাক বাকা করে বের হয়ে গেলো। আমি অসহায় গালে হাত দিয়ে শুধু দেখেই গেলাম।
কি হচ্ছে মাথায় কেন,কান দিয়েও ঢুকতেছে না। কাল রাত থেকে হাবলা হয়ে আসছি। ভুতের সাথে করলাম ফষ্টিনষ্টি। ভুতের চেহারা দেখলাম তাজকিয়ার মুখে,শেয়ার করতে গেলে চড় খাচ্ছি। আমি কি আসলেই হাবলা? ভুত কি আমাকে হাবলা পেয়েছে নাকি। আর তাজকিয়া কি আসলেই ভুত? নাকি ওর মুখে আমি ভুত দেখেছি? নাকি ভুত ওর গায়ে ভর করেছিলো? নাকি আমার মাথায় সমস্যা? না না না,নিতে পারছি না। আমাকে এখন রহস্য বের করতে হবে। কিন্তু কিভাবে? ডক্টরের কাছে যাবো? নাকি কবিরাজের কাছে? এ খোদা, আমার এখন কি করনীয়।
যা হবার হবে। আমি কবিরাজের কাছেই যাবো। ভুত থাকলেও চলে যাবে,আর আমার মাথায় গ্যাস্টিক, না সরি সমস্যা থাকলেও নেমে যাবে। কারণ ভুত আছে কিনা,সেটা শিওর হলেই আমি বাচি।
বিছানা ছেড়ে উঠে ওয়াশরুমে গেলাম। গোসল করতেছি। আয়নার দিকে তাকালাম। না মানে,বিভিন্ন হরর মুভিতে দেখেছি আয়নাতে ভুত থাকে। আর এইটাও জানি,আপনিও তেমন কিছুই ভাবতেছেন,যে এখন কিছু হবে। হা হা হা,আপনাকে হাবলা বানিয়ে দিলাম। আমার সাথে কিছুই হয়নি এখন।
🔴গল্পের মাঝে এড দেওয়ার জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখিত।
দেখতে দেখতে শীতকাল চলে এলো এজন্য আমরা নিয়ে এসেছি ন্যায্য দামে উন্নতমানের শীতকালের জ্যাকেট(কুটি) জ্যাকেটের বিবরণ 🥰👇
Ladies Primium Winter Overcoat
চায়না উইন্টার ফেব্রিক্সের প্রিমিয়াম কোয়ালিটির ওভারকোট।
দুই পাশে পকেট দেওয়া আছে।
ছবির সাথে মিল থাকবে এবং কোয়ালিটি সম্পূর্ণ হিট প্রোডাক্ট।
লং সাইজঃ ৩৬/৩৮
বডি সাইজঃ ৩৮,৪০,৪২,৪৪
লেডিস জ্যাকেট গুলো দেখতে কেমন পিক দেওয়া আছে 👇
সাইজ বর্ণনাঃ
S=34,36 (আপাতত নাই, সামনে আসবে)
L=38,40
XL=42,44
মূল্য ১২০০৳
অর্ডার করতে ইনবক্স করুন📨
আমার গল্পে ফিরে আসা যাক🤩
ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে নিছে আসি। বাহ,বাহ, কি ভালো পরিবার আমার। সবাই টেবিলে বসে খাবার খাচ্ছে,অথচ আমাকে একবারও ডাকেনি। আমার ভাবনার মাঝেই আম্মু আমাকে দেখে ফেলেছে। আম্মু বলল," কিরে তোর ক্ষুদা লেগেছে? লাগলে খেয়ে নিতে পারিস"। আমার মেজাজ খিটখিটে গরম হয়ে যাচ্ছে। তাজকিয়া আসার পর থেকেই এরা যেনো রত্ন পেলো। আমি যে তাদের ছেলে,এইটা কি ভুলে যাচ্ছে? যাইহোক, রেগে গেলেন তো হেরে গেলেন। কথাটা মাথায় এনে খাবার টেবিলে বসি। কিছু ভাত নিলাম প্লেটে,মাংসের বাটি নিতে যাবো।তখনি আম্মু বাটিটা ধরে তাজকিয়ার প্লেটে ঢেলে দিলো। এক টুকরো মাংসই ছিলো। মাংস তো দিয়েছেই,আবার বলেও উঠলো, " রিয়াজ না খেলে কিছু হবেনা। কিন্তু তুমি বেশি বেশি খাও। সামনে তোমাদের বিয়ে দিবো। পুরো মহল্লার লোক যেনো বলে। আমার বাসার বউটা সবার থেকে সেরা"। আমি কান্ড দেখছি আর নিত্যসময়ের মতো হাবলা হচ্ছি। সবাই সেরা বউটাই দেখলো, এদিকে আমি যে সেরা বয়ফ্রেন্ড, তা কারো নজরেই লাগেনা। দুনিয়া মাদারি হয়ে গেছে।
যাইহোক, আলু ভর্তা আর ডাল দিয়ে খেয়ে নিলাম ভাত। তখনি মা বলল,"
-ভাত তো খেয়েছিস পেট ভরে। এইবার থালাবাসন গুলা পরিস্কার করে ফেল।
- তুমি আমারে পাইছো কি? ( বলেই চেয়ারটা লাথি মারলাম। সবাই আমার দিকে হা করে তাকাই আছে। আমি গরম গলায় আবার বললাম)
- মাংস সব ওরেই দিলা। কোনো রকম ডাল ভাত খেলাম,তাও সহ্য হচ্ছেনা। বিয়ের আগেই মাথায় তুলে রাখতাছো তারে। ওয় তো তোমাদের জন্যই সাহস পাচ্ছে। সকাল থেকে তোমাদের কান্ড দেখে যাচ্ছি আমি। এদিকে আমার কি অবস্থা কেও খেয়াল করেই দেখছেনা। আমি কি মানুষ না?
কড়া বাসায় কথা গুলা বলার পর আম্মু বলল," আমরা কেও ভয় পাইনি"। এ বলেই সবাই আবার খাওয়া শুরু করলো। যাহহ শেষ অব্দি বাসায় ইজ্জৎটাও হারালাম। ফোনটা পকেটে নিয়ে বের হয়ে গেলাম আমি। কল দিলাম রনিকে।
- হ্যালো রিয়াজ বল।
- তুই কই বন্ধু? আমার জীবন তো শেষ হয়ে গেলো রে।
- কি হয়েছে আবার।
- বন্ধু ভুত পিছু নিয়েছে আমার।
- হা হা হা হা। ও মারে,কেও আমার হাসি থামা। শালা ভুত বলে কিছু আছে নাকি।
- শেষমেশ তুইও?
- আচ্ছা আচ্ছা ঠিক আছে। বল ভুত তোর কি সর্বনাশ করেছে।
- ভুত করেনি,আমি ভুতের সাথে রাতে সে* করেছি।
- বুঝলাম না,কল দিয়েই এতো মজার মজার জোক্স শুনাচ্ছিস কেন। সেই হচ্ছে বন্ধু।
- তুই বেডা ফোন রাখ।
কলটা কেটে দিলাম। কেও বিশ্বাস কেনো করছেনা। না,আমি কবিরাজের কাছেই যাবো।
আমার বাসা থেকে মাত্র দেড় কিলো দূরে একটা কবিরাজের দোকান আছে। সবসময় আসা- যাওয়ায় চোখে পড়ে। উনার কাছে গিয়ে দেখি,যদি পাই কোনো সহযোগিতা। একটা রিক্সা নিয়ে রওনা দিলাম কবিরাজের কাছে। প্রায় ২০ মিনিট পর উনার দোকানের সামনে পৌছাই । রিক্সা ভাড়া দিয়ে দোকানে প্রবেশ করি। তখনি কবিরাজ মন্টু মিয়া বলল,
- দাড়া।
আমি সেখানেই দাঁড়িয়ে গেলাম। উনি আমার দিকে নিজেই হেটে হেটে আসলো। হাতে একটা অদ্ভুত লাঠি,আর মাথায় সাদা লম্বা চুল। গায়ে পাঞ্জাবি, এবং মুখ ভর্তি দাড়ি। উনাকে দেখেই ভয় পাচ্ছি আমি। উনি আমার কাছে এসে বলল,
- মেয়ে ভুত। রাতে ওর সাথে সহবাস করেছিস। দিনেও অন্যের চেহারায় তাকে দেখতে পাস। তাইনা?
- হ্যাঁ হুজুর হ্যাঁ। হুজুর,আমাকে বাচান। কেও বিশ্বাস করেনা আমার কথা। একমাত্র আপনিই বলার আগেই বুঝে গেলেন। ( এ বলেই আমি হুজুরের পায়ের কাছে চলে গেলাম)
- পা ছাড়। শুন,আমি যেভাবে বলবো,ঐ ভাবে করবি।
- হ্যাঁ বলুন?
- বাসায় যাবি,অপেক্ষা করবি পিশাচটার জন্য। তাকে মনে মনে ডাকবি। সে আর তাজকিয়ার চেহারায় নয়,তার নিজের আসল চেহারা নিয়ে তোর সামনে আসবে। তুইও তার সাথে হেসে হেসে কথা বলবি। ওর কাছে যাবি। কোনোভাবে ওর মাথা থেকে একটা চুল ছিড়ে তোর পকেটে রাখবি। কাজ হয়ে যাবে। চুলটা আমার কাছে আগামীকাল নিয়ে আসবি। আমি পিশাচকে বন্দি করে ফেলবো।
- হুজুর,যদি বলে আবার উল্টাপাল্টা কিছু করার জন্য?
- তো করবি। তাকে কোনোভাবে রাগানো যাবেনা।
- হ্যাঁ তা ঠিক। অবশ্যই আমার ভালোই লেগেছে গতকাল।
- এসব বললে হবেনা। পিশাচটা কিন্তু অনেক শক্তিশালী। ওর মায়ায় পড়িস না। নিজেকে কন্ট্রোল রাখবি।
- আচ্ছা হুজুর।
- এ নে,এই তাবিজটা পকেটে রাখ। যদি দেখিস পিশাচটা তোকে মেরে ফেলার চেষ্টা করে। তবে তাবিজটা ওর কপালে চেপে ধরবি।
- এতে কি হবে?
- সে যন্ত্রণা সহ্য করতে পারবেনা। তৎক্ষনাৎ পালিয়ে যাবে। অন্তত এই যন্ত্রণা তার ২৪ ঘন্টা থাকবে। ২৪ ঘন্টার মধ্যে সে তোর কাছেও আসতে পারবেনা। ততক্ষণে আমি একটা সমাধান দিবো। তবে সে তোকে মারতে চাইলে তুই তাবিজ ব্যাবহার করবি। আর যদি দেখিস সে ভালো আচরণ করছে। তবে ওর চুল একটা নেওয়ার চেষ্টা করবি।
- আচ্ছা।
- তুই তাহলে যা এখন। আজ রাত ১২ টার পরেই তাকে স্বরণ করবি।
মন্টু হুজুরকে বিদায় দিয়ে বের হয়ে এলাম। যাক,অবশেষে একটা উপায় পাওয়া গেলো। বাসায় এসে দেখি তাজকিয়া নেই। অর্থাৎ চলে গেছে। আব্বু অফিসে, আর আম্মু টিভিতে সিরিয়াল দেখছে। আমার দিকে আম্মু তাকিয়েই,নাক বাকা করে আবার টিভিতে মন দিলো। আমিও পাছা বাকা করে রুমে চলে এলাম।
সারাদিন অপেক্ষা করার পর সন্ধ্যা ঘনিয়ে এসেছে। তাজকিয়ার কল আসে ফোনে। আমি রিসিভ করতেই তাজকিয়া বলল,
- কি করো।
- কি করবো? বাড়িতে তো আমার ইজ্জত ঢুবিয়ে গেলে।
- ঠিকি তো,তুমি উল্টাপাল্টা কাজ কেনো করো।
- কি করেছি আমি? তোর গায়ে ভূত ভর করেছিলো। তুই তো সেটা জানস না,আমি নিজের চোখে দেখেছিলাম।
- এ ব্যাপারেই একটা কথা ছিলো।
- কি কথা।
- তুমি যখন জ্ঞান হারিয়েছো, তখন তোমার বাম পাশের ফ্লোরে একটা পায়ের চাপ দেখি আমি। যেটা হেটে হেটে জানালা অব্দি গিয়ে উধাও হয়ে যায়। আমি শুধু পায়ের চাপ দেখতে পাচ্ছিলাম।অন্য কোনো কিছু দেখিনি।
- এইবার দেখলা তো? ওটা ভুত ছিলো। কিন্তু আমাকে আগে বলোনি কেন?
- আমার ভয় করতেছিলো।
- যাক,আমার লক্ষীসোনাটা যে সত্যটা জেনেছে,এইটাই বেশি। আচ্ছা শুনো, কাল বাসায় আইসো। তোমাকে একটা ঘটনা বলবো।
- কিসের ঘটনা।
- বাড়িতে এলেই বলবো।
- আচ্ছা বাবা আসবো। খেয়েছো?
এরপর ওর সাথে প্রেমালাপ শুরু করি। বকবক করতে করতে রাত ১০ টা বেজে যায়। খাওয়াদাওয়া শেষ করে উঠতে উঠতে ১১ টা বাজে। বারান্দায় দাঁড়িয়ে একটা সিগারেট ধরালাম। সাড়ে এগারোটা বেজে গেছে প্রায়। ১২ টা বাজবে এখন। আমি মিশনে যাই।
রুমে গিয়ে বিছানায় বসি। মনে মনে ভুতটাকে কল্পনা করতে লাগলাম। ধীরে ধীরে আবহাওয়া পরিবর্তন হচ্ছে। রুমটা কেমন যেনো ঠান্ডা হয়ে আসছে। আমি চোখ খুলে তাকাই। দেখি জানালা দিয়ে একটা সাদা ধোয়া আমার রুমে প্রবেশ করলো। আমার হাটু কাপছে। ভয়ে ভয়ে তাকিয়ে আছি। দেখলাম, সাদা আলোটা ফ্লোরের উপর এসে দাঁড়িয়ে যায়। হটাৎ সেখান থেকে একটা মেয়ে ভাসমান হয়। আমি মেয়েটার পিছন থেকে দেখছি। উল্টো দিকে মুখ করে দাঁড়িয়ে আছে সে। চুল গুলো পুরো ফ্লোর অব্দি নেমেছে। পিছন থেকে চুল ছাড়া আমি মেয়েটার কিছুই দেখতে পাচ্ছিনা। মেয়েটা ধীরে ধীরে পিছু ফিরতে লাগলো। আমি শুধু ভাবছি ওর মুখটা কতটা ভয়ংকর হতে পারে। মেয়েটা ঘুরে অবশেষে তার মুখ দেখালো আমাকে।
চলবে........?
( গল্পের ব্যাপারে সকল অভিযোগ, অনূভুতি, রিভিউ, আলোচনা, সমালোচনা করুন আমার গ্রুপে। আর কমেন্টে জানান কেমন লেগেছে)
৪র্থ পর্ব লিংক 👇
0 Post a Comment:
Post a Comment