গল্পের_নাম_এক_রাতের_বউ
লেখিকা_সাইমা_ইসলাম_হ্যাপি
পর্ব_৭(শেষ পর্ব)🌸
কথক: রুমা কথা গুলো বলে কান্না ভেঙে পড়লো! সালেহা চৌধুরী রুপাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করতে লাগলো। এইটা দেখে সবাই অবাক হয়ে গেলো" রুমা সয্য করতে না পড়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেললো? জ্ঞান ফিরতে দেখতে পেলো, ওই একটা রুমে সুয়ে আছে। রুপা বলে চিৎকার দিয়ে উঠে পড়লো?
রিয়া: এই আপনে এইসব নাটক বন্ধ করে৷ এখনই এই বাড়ি থেকে চলে যান!
রুমা: রিয়া আমাকে তুই ক্ষমা করে দে,আমি কেন যে তোর কথা বিশ্বাস করলাম না। আজ বিশ্বাস করলে হইতো রূপার সাথে শেষ বারের মতো কথা বলতে পারতাম!রিয়া তুই কেন আগে বলোস নাই। তুই আমার সন্তান কেন আমাদের থেকে নিজের পরিচয় লুকিয়েছিস!
রিয়া: আপনে এই বাসা থেকে চলে যান আপনাকে আমি কোনো কিছুর উত্তর দিতে চাই না। আপনে কি চলে যাবেন নাকি? আমার মরা মুখ দেখবে কোনটা'
সালেহা চৌধুরী : রিয়া দাদু ভাই এভাবে বলে না" দেখো এখানে তোমার ও দোষ আছে। আমাদের আগে কেন বলো নাই তোমার পরিচয়! এভাবে কেন লুকিয়ে রেখেছিলে? তুমি জানো আমরা তোমাদের কত খুঁজেছি!
রিয়া: কি পরিচয় দিতাম আপনারা তো ভালোই আছেন।আমাদের কথা আপনাদের মনে যে কত আছে৷ তাতো দেখতে পেয়েছি" নতুন সংসার স্বামী সন্তান নিয়ে তো ওনি ভালো আছে। সেখানে গিয়ে কেন ওনাকে বলে ওনার সংসার ভাঙতে যাবো!
কথক: তখনই রিয়ার দাদু বাড়ি থেকে লোকজন এসেছে।রিয়াকে শান্তনা দিয়ে রিয়ার আব্বুকে নিয়ে চলে গেলো্! রিয়া যেতে না চাইলে জোর করে নিয়ে যায়! রিয়া সারাদিন কান্না করে " রিয়ার আব্বু বললো?
রিয়ার আব্বু: রিয়া কান্না করিস না, আর কান্না করে রূপার আত্নকে কষ্ট দিস না৷ তুই যদি এভাবে ভেঙে পড়িস তাহলে রূপা অনেক কষ্ট পাবে রে!
রিয়া: না আব্বু আমি আর কান্না করবো না। এই দেখো এই যে আমি চোখ মুছলাম আর কান্না করবো না। কিন্তু আব্বু আমার এই সব ভালোবাসা যে সয্য হচ্ছে না।যখন আমার বোনটা বেঁচে ছিলো তখন তো কেউ ছিলো না আমাদের পাশে। আজ আমার বোনটা আমাদের ছেড়ে অনেক দূরে চলে গেছে। তখনই সবাই আমাদের আপন করে নিল? আমার বোনটা কতটা আক্ষেপ নিয়ে এই দুনিয়াতে থেকে চলে গেলো। আব্বু আম্মুকে এক নজর দেখার জন্য কতটা ছটফট করছিলো। আমি পারি নাই ওর শেষ ইচ্ছেটা পূর্ণ করার,
কথক: কথাটা বলে রিয়া ওর আব্বুকে জড়িয়ে ধরে কান্না করতে লাগলো! রিয়ার আব্বু রিয়ার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বললো?
রিয়ার আব্বু: আর কষ্ট পাস না, তুই তো চেষ্টা করছিস" আর রিয়া তুই তোর আম্মুকে নিয়ে আসলেও।রূপার সাথে দেখা হতো না রে, তুই চলে যাওয়া ১০ মিনিট পরে ওই এই দুনিয়া থেকে বিদায় নেয়!এইটা ভেবে কষ্ট পাস না, এক মেয়েকে তো হারিয়ে ফেললাম। আবার তোকে হারাতে চাই না রে মা!
কথক: রিয়া কান্না করতে লাগলো" রিয়ার বড় খালামনি রিয়াকে বুকে জড়িয়ে ধরে শান্তনা দিতে লাগলো! এভাবে অনেক দিন কেটে যায়" রিয়া এখন কারো সাথে কথা বলে না। সারাদিন একা একটা রুমে সুয়ে থাকে, খাওয়া দাওয়া প্রায় ছেড়ে দিয়েছে। রিয়ার অবস্থা প্রায় খারাপের দিকে চলে যাচ্ছে। রুমা রিয়ার সামনে আসার সাহস ও পাচ্ছে না" আর এইদিকে এই অবস্থার কারণে আদিত্যর বিয়ে পিছিয়ে দেয়" আদিত্য প্রতিদিন রিয়ার সাথে দেখা করতে আসলেই। রিয়া আদিত্যর সাথে দেখা করে না' প্রতিদিন আদিত্য ব্যাথ হয়ে ফিরে যায়! রিয়া এই কয়েক মাসে এইটা জেনে গেছে যে। তার মা কাউকে বিয়ে করে নাই" তার বাবার স্ত্রী হয়ে তার দাদুর বাড়িতে থাকতো! আর তার বড় খালামনির রাগের কারণ ছিলো! তার আব্বু আম্মু পালিয়ে গেলে তার ছোট চাচ্চুর সাথে তাকে বিয়ে দেওয়ার কারণে। সেই কারো সাথে ভালো করে কথা বলতো না! এইদিকে রিয়ার আব্বু রিয়ার টেনশনে বসে থাকতে দেখে রুমা এসেছে কাধে হাত রাখলো?
রিয়ার আব্বু: রুমা" আজ আমি সব তো ফিরে পেলাম। শুধু আমার ছোট মেয়েটায় কাউকে পেলো না। আজ তুমি ও আমার সাথে আছো আমার ফ্যামিলি ও আছে। কিন্তু আমার ওই ছোট মেয়েটায় নাই! রিয়াকে আমি কিভাবে শান্তনা দিবো বল? যেখানে আমি নিজেই এইটা মেনে নিতে পারছি না!
কথক: রিয়ার আব্বু কান্না করতে লাগলো, রুমা রিয়ার আব্বুর দুইটা হাত ধরে বললো?
রুমা: সব দোষ আমার, আমি আমার সন্তানদের কাছে থাকলে। আমার ছোট মেয়েটাকে হারাতে হতো না" আমার মেয়ে দুইটা কত কষ্ট পেয়েছে জীবনে। যদি আমি ওদের পাশে থাকতাম তাহলে এতো কষ্ট পেতে হতো না। আমাদের বাড়িতে কাজের ভুয়া হয়ে থাকতো না। আর আমাকেও না পাওয়া আক্ষেপ ও থাকতো না!
রিয়ার আব্বু:ভুলটা তোমার একার না, আমার ও আছে। আমি ও কেন যে তোমাকে রাগে বসে ডির্ভোস দিয়ে মেয়েদের নিয়ে চলে আসলাম। যদি ধৈর্য ধরে সব কিছু ঠিক করে নিতাম।তাহলে আজ এমন কিছুই হতো না'
সালেহা চৌধুরী : দেখো অতীত নিয়ে আর ভেবে লাভ নাই। এখন তোমাদের একটা সন্তান আছে, যাকে নিয়ে ভাবা শুরু করো। অতীত ভেবে আর সেইটা ফিরিয়ে আনতে পারবে না। রিয়াকে কিভাবে আগের মতো স্বাভাবিক করবে সেইটা নিয়ে ভাবো!
রুমা: আম্মু আমি তো ওর সামনে যেতে পারছি না৷ ওর সামনে গেলে ওই রেগে যাচ্ছে! আমাকে ওই সয্য করতে পারছে না"
সালেহা চৌধুরী : এই ভয়ে তুই রিয়ার থেকে দূরে থাকিস না। এ-র কাছে যাওয়ার চেষ্টা কর, দূরে দূরে থেকে আরো দুরত্ব বাড়িয়ে দিস না!
রিয়ার আব্বু: হ্যা এইটা আম্মা ঠিক কথা বলছে। তুমি তো ওর আম্মু ওই যতই রেগে থাক না কেন? তোমাকে ওই অনেক ভালোবাসে। দেখো তোমাকে ওই ক্ষমা করে দিবেই!তাই তুমি ওর কাছ থেকে দূরে দূরে থেকো না!
কথক: রুমা কিছুক্ষন ভাবতে লাগলো তার পর রিয়ার রুমে চলে গেল? রিয়ার রুমে যেতে রিয়া চিল্লাইয়া উঠলো? রিয়ার আম্মু রিয়াকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বলল?
রুমা:: মা আমি জানি তোর কতটা কষ্ট হচ্ছে, কিন্তু মা একবার ভেবে দেখেছিস। আমি তোদের মা আমি যত খারাপ হয় না কেন? একটা মা কখনো তার সন্তানের ক্ষতি চাইবে না। তোর যেমন কষ্ট হচ্ছে একবার ভেবে দেখ। আমার কতটা কষ্ট হচ্ছে, তাকে আমি ১০ মাস ১০ দিন এই পেটে রেখেছিলাম। কতটা আদর স্নেহ মায়া মমতা দিয়ে তাকে বড় করবার চেষ্টা করছি। ভাগ্যক্রমে তোদের ছেড়ে এতো টা বছর একা কাটাতে হলো। প্রতিটা রাত কেমন কেটেছে শুধু আল্লাহ আর আমি জানি। কোনো মা বাবা তার সন্তানকে ছাড়া ভালো থাক-তে পারে না। প্লিজ মা আমাকে ক্ষমা করে দে, এক সন্তানকে হারিয়ে ফেলেছি সেখানে তোকেও আমি হারাতে চাই না। আমাকে ক্ষমা করে দে মা" আমি তোর দুইটা পায়ে ধরি!
কথক: রুমা যখন কান্না করতে করতে রিয়ার পায়ে ধরতে যাবে। সাথে সাথে রিয়া রুমাকে বুকে জড়িয়ে ধরে কান্না করতে লাগলো? আর বলতে লাগলো?
রিয়া; আমাকে ক্ষমা করে দেও আম্মু আমার ভুল হইছিল।।আমি যদি তোমাকে প্রথমে সব বলে দিতাম তাহলে এতো কিছু হতো না"
রুমা: আচ্ছা এইসব বাদ দে, যাহ ফ্রেশ হয়ে আয়৷ আমি তোকে আজ নিজের হাতে খাওয়া দিবো!
কথক: রিয়া ফ্রেশ হতে চলে গেলো রুমা নিচ থেকে খাবার নিয়ে আসলো" রিয়াকে খাওয়া দিতে লাগলো রিয়ার গলা দিয়ে খাবার নামতে না চাইলেও। রিয়া পানি দিয়ে খেতে লাগলো" ২নোকমান খেয়ে বললো?
রিয়া: আম্মু আমি পারছি না৷ আমার বুকের ভিতর টা জ্বলে পুড়ে যাচ্ছে। আমার বোনটা ওই কবরে একটা কিভাবে যে থাকছে।
কথক: রিয়াকে বুকে জড়িয়ে নিয়ে দুইজন কান্না করতে লাগলো! রিয়া আর রুমাকে এক হতে দেখে সবাই অনেক খুশি হলো! ১মাস পর' আদিত্য আর তুলির বিয়ে তাই সবাই সালেহা চৌধুরী বাড়িতে চলে গেলো? সারা বাড়ি সুন্দর করে সাজিয়ে রাখছে! রিয়া ছাদের উপরে এক কানিতে দাঁড়িয়ে আছে। তখনই পিছন থেকে আদিত্য বললো?
আদিত্য: রিয়া আমি এই বিয়ে করতে চাই না"
রিয়া: কেন?
আদিত্য: রিয়া আমি তোমাকে ভালোবাসি, আর তুমি তো আমার স্ত্রী। আমাদের তো বিয়ে হয়ে গেছে " আমি দ্বিতীয় বিয়ে করতে চাই না!
রিয়া: হাহা তুমি কেমন স্বামী? নিজেকে স্ত্রীকে এতোটা অপমান হতে দেখেও চুপ চাপ দাঁড়িয়ে দেখো! কাউকে কিছু বলার সাহস পাও না! আর সেখানে বলো আমি তোমার স্ত্রী ! শুনো তোমার মতো স্বামীর আমার কোনো দরকার নাই! আমি তোমাকে ডির্ভোস লেটার পাঠিয়ে দিবো! তুমি তুলি কে বিয়ে করে সুখে থাকো"
কথক: রিয়া কথাটা বলে নিচে চলে আসলো" রিয়া চলে যাচ্ছিলো তখনই রাফি রিয়াকে পিছন থেকে ডাক দিয়ে বললো?
রাফি: রিয়া আপু?
রিয়া: কি? আমার নামে বদনাম দেওয়ার সুযোগ খুঁজছো নাকি?
রাফি: না আপু আমি তোমার সাথে কিছু কথা বলতে চাই!
।
রিয়া: কি কথা তাড়াতাড়ি বলো?
রাফি: আপু আমাকে ক্ষমা করে দেও, তুমি আমাকে থাপ্পড় মেরেছিলে তার উপরে ভাইয়া আমাকে মেরেছিলো। যার কারণে রাগে বসে আমি এমনটা করছি।
রিয়া:ওই পিক গুলো?
রাফি: সব এডিট করা ছিলো আমাকে ক্ষমা করে দেও। আমি ভালো হয়ে গেছি বিশ্বাস করো। আমি আর কোনোদিন মেয়েদের সস্মান নষ্ট করবো না।
রিয়া: আচ্ছা৷ আর ক্ষমা চাইতে হবে না। তুমি ভালো হয়ে গেলে ভালো"
কথক: রিয়া কথাটা বলে নিচে চলে গেলো" সবার সাথে টুকটাক কথা বলতে লাগলো! দুপুরের দিকে বর যাত্রি হিসাবে রিয়া ও গেলো! রিয়া তুলিদের বাসায় গিয়ে সবার সাথে বসে খাবার খেতে লাগলো! আর এইদিকে আদিত্য রিয়ার দিকে এক নজরের তাকিয়ে আছে! সবার খাওয়া শেষ হয়ে গেলে সন্ধ্যার দিকে তুলি আর আদিত্যর বিয়ে পড়ানো শুরু করে দিলো। আদিত্যকে রেজিস্ট্রার খাতায় সাইন করতে বললে? আদিত্য সাইন না করে বসে থাকে? আর এই দিকে রিয়া ওদের ছবি তুলতে ব্যবস্থা হয়ে যায়। সালেহা চৌধুরী আদিত্যকে বললে?
সালেহা চৌধুরী : কি ব্যাপার দাদু ভাই সাইন কেন করছো না!
তুলি: আদিত্য এভাবে বসে আছো কেন? তোমার কি আমাকে বিয়ে করার কোনো ফিলিংস তো নাই।
কথক: এক পর এক আদিত্যকে বলতে লাগলো? সাইন করতে আদিত্য কারো কথা না শুনে উঠে পড়লো?আদিত্য তুলির দিকে তাকিয়ে বললো?
আদিত্য: তুমি আমাকে ক্ষমা করে দেও? আমি তোমাকে বিয়ে করতে পারবো না"
তুলি: what
সালেহা চৌধুরী : কি বিয়ে করতে পারবে না মানে?
আদিত্য: দাদিমা আমি বিবাহিত ' আমার স্ত্রী আছে! আমি তাকে অনেক ভালোবাসি। আমি তাকে ছাড়া কাউকে স্ত্রী হিসাবে মানতেপারবো না!
সালেহা চৌধুরী : বিবাহিত মানে? কাকে বিয়ে করেছো তুমি?
আদিত্য: দাদিমা আমার স্ত্রীকে তোমরা সবাই চেনো?
তুলি: সবাই চিনি মানে?
রিয়া: কিন্তু আমি তোমাকে স্বামী হিসাবে মানি না" আমি তোমাকে ঘৃণ্য করি" তুমি এইসব করে কি বুঝাতে চাচ্ছো। দেখো বিয়ে করতে এসেছো বিয়ে করে নেও! তুলি তোমাকে অনেক ভালোবাসে! মেয়েদের নিয়ে অনেক খেলছো এখন অন্তত ভালো হয়ে যাও।
আদিত্য: রিয়া দেখো আমি তোমার বিয়ে করার পর থেকে৷ আমি অনেকটা নিজেকে পরিবর্তন করে ফেলেছি। আমি তোমাকে ভালোবাসি বিশ্বাস করো?
রিয়া: আপনার ভালোবাসার আর আমার দরকার নাই! আপনে বিয়ে করতে এসেছেন বিয়ে করেন।
আদিত্য: বার বার এক কথা বলবে না প্লিজ!
রিয়া: ওকে বলবো না, আমাদের যে বিয়ে হইছে তার প্রমান কি হ্যা! দেখেন হুদাই বেহুদা কথা বলেন না। আপনার সাথে আমার কোনো সম্পর্ক নাই!
তুলি: রিয়া সত্যি তোমার সাথে ওর কোনো সম্পর্ক নাই। তাহলে ওই যে বলছে, তোমার সাথে নাকি ওর বিয়ে হইছে।
রিয়ার আব্বু: আদিত্য আমার মেয়েকে নিয়ে বাজে কথা বলো না। আমার মেয়ে কখনো আমাকে না জানিয়ে বিয়ে করবে না। আমি আমার মেয়েকে চিনি" আমার মেয়ে কখনো কোনো ছেলেদের সাথে মিশে নাই। আর সেখানে নাকি আমাদের লুকিয়ে তোমাকে বিয়ে করবে!
আদিত্য: আংকেল বিশ্বাস করেন আমি মিথ্যা বলছি না। হ্যা আপনার মেয়ে অনেক ভালো, কিন্তু এইটাও সত্যি যে ওর সাথে আমার বিয়ে হইছে।
রিয়া: চুপ করে আপনার সাথে আমার কিছুই হয় নাই।
রাফি: কিন্তু রিয়ার আপু আমার কেন জানি মনে হচ্ছে। তুমি এইটা মিথ্যা বলছো? দেখো আমি যে ছবি গুলো এডিট করেছি। ওই ছবি গুলোর মানুষ তুমি আর ভাইয়া ছিলে!
কথক: রাফির কথা শুনে সবাই অবাক হয়ে গেলো আদিত্য বললো?
আদিত্য:; মানে ছবি এডিট করছো কি বলিস?
রাফি: সবাই আমাকে ক্ষমা করে দিয়েও। আসলে রিয়া আপুকে আমি প্রায় সময় ভাইয়ার রুমে যেতে দেখতাম! আমার কিছুটাহ সন্দেহ হইতো। তাই একদিন আমি ভাইয়ার জানালা দিয়ে লুকিয়ে এইসব দেখে ফেলি। ভাইয়া আপুর সাথে যাহ করছে রিয়া আপু একটা কথা ও বলছিলো না। রিয়া আপু ভাইয়ার স্পর্শ গুলো অনুভাব করতে থাকে! আমি সেদিন পুরো অবাক হয়ে গেছিলাম। আর তুলি আপুর সাথে যখন বিয়ে সেখানে রিয়া আপু থাকলে সমস্যা হবে। ভাইয়া ফুপির মতো সবাই তাড়িয়ে দিতে পারে। তাই আমি ছবি গুলো এডিট করে রিয়া আপুকে এই বাড়ি থেকে সরিয়ে দিতে চাইছিলাম।
কথক: রাফির কথা শুনে রিয়া চুপ হয়ে যায়" রিয়ার আব্বু রেগে রিয়ার দিকে তাকিয়ে বললো?
রিয়ার আব্বু: রিয়া এইসব কি বলছে রাফি?
রুমা: কি হলো চুপ করে আসছিস কেন? কথা বল? রাফি যাহ বলছে তা কি সত্যি!
আদিত্য: তোমরা তো রাফির কথা শুনতে পেলে, আর রিয়ার ব্যবহার দেখে বুঝতে পারছো। আমি মোটেও মিথ্যা বলছি না' আর যদি বিশ্বাস না করো তাহলে আংকেল আরেকটা প্রমান দেয়। আপনার যে চিকিৎসার জন্য ৫লাখ টাকা রিয়া কোথায় পাইছে। ওকে জিজ্ঞেস করেন তো এক রাতের ভিতরে কিভাবে পেলো!
রিয়া: আদিত্য চুপ করবেন প্লিজ"
আদিত্য: কেন চুপ করবো বলো এতো টাকা কই পাইছিলে?
রিয়ার আব্বু: রিয়া কোথায় পাইছিলি তোকে অনেকবার জিজ্ঞেস করছিলাম। তুই আমাকে বলছো নাই এরিয়ে গেছোস!
রিয়া: হ্যা আব্বু আমার আর আদিত্য বিয়ে হইছে। আর তোমাকে যে টাকা দিয়ে অপারেশন করেছি। ওইটা আমার দেনমোহরের টাকা ছিলো!
কথক: রিয়ার কথা শুনে সবাই অবাক হয়ে গেলো। রিয়ার আব্বু রেগে রিয়ার গালে ঠাস ঠাস করে থাপ্পড় দিয়ে বললো?
রিয়ার আব্বু: ছি তুই বিয়ে করে ফেলেছিস, আমাদের না বলে এতো বড় সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছিস।
রিয়া: আব্বু আমার ওইখানে উপায় ছিলো না৷ আমি যদি টাকাটা না দিতাম তোমাকে আমি বাঁচাতে পারতাম না। আমার যে কোনো ভাবে হোক টাকাটা দরকার ছিলো?
রিয়ার আব্বু: তাই বলে বিয়ে করে নিবি আমাদের একবার বলার প্রয়োজন মনে করলি না।
আদিত্য: আংকেল আপনে আপনার মেয়ে বিয়ে করছে জন্য মারছেন। আর সেই আপনাকে কতটা ভালোবাসে সেইটা আপনে জানেন না। আপনে জানেন আপনার মেয়ে আপনাকে বাঁচাতে গিয়ে কি পথ ধরেছিলো। সেখানে তো আমি শখের বসে তাকে বিয়ে করেছিলাম বলে আজ আপনার মেয়েকে এতো ভালো দেখতে পাচ্ছেন।
রিয়া: আদিত্য বেশি হয়ে যাচ্ছে কিন্তু' আর একটা কথা বলবে না! যদি একটা কথা বলো তাহলে আমি কিন্তু নিজেকে শেষ করে দিবো।
আদিত্য: ওকে আমি কিছু আর বলবো না" রিয়া প্লিজ আমাকে ক্ষমা করে দেও। তোমার মতো এতো ভালো স্ত্রীকে আমি হারাতে চাই না। যাকে এতোটা কষ্ট দিলাম তার পর সেই সব সময় আমার কথা ভেবে গেছে। যে মেয়েটা সবার কথা ভাবতে জানে৷ কিন্তু নিজের কথা ভাবে না, আমি সেই মেয়েটার কথা ভাবতে চাই।রিয়া আমাকে প্লিজ ক্ষমা করে। আমাকে স্বামী হিসাবে কবুল করে নেও। আমি তোমাকে কথা দিচ্ছি, কখনোই তোমাকে আর কষ্ট দিবো না। আমি তোমাকে নিজের মন থেকে স্ত্রী হিসাবে মেনে নিয়েছি। দাদিমা তোমার নাতনিকে বুঝাও না। আমি ওকে ছাড়া আর এক মুহুর্ত থাকতে পারবো না।
সালেহা চৌধুরী : দাদু ভাই সব বুঝলাম, তুমি আমাদের না জানিয়ে কেন বিয়ে করলে।আর বিয়ে করলে ভালো কথা, তুমি রিয়াকে আমাদের বাড়িতে দেখেও।কেন তুমি কাউকে বলে না ওই তোমার স্ত্রী। আর রিয়া বাহ কেন তোমাকে স্বামী হিসাবে মানছে না।
আদিত্য: দাদিমা আসলে?
কথক: আদিত্য বলতে যাবে তখনই রিয়া বললো?
রিয়া: আমি বলতে না করেছিলাম" আমি চাই নাই। তাই আদিত্য কাউকে কিছু বলে নাই! আর তুলি তোমাকে এই অবস্থায় নিয়ে আসার জন্য ক্ষমা করে দেও। আমি জানতাম না আদিত্য আমাকে মন থেকে ভালোবাসে। আগে জানলে কখনো এতো দূর আসতে দিতাম না। তাহলে আমি সবাইকে বলে দিতাম "
তুলি: যাহ বুঝার বুঝছি, কাজী সাহেব ওদের দুইজনকে নতুন করে বিয়ে দিয়ে দেন! আর রিয়া আমাকে ক্ষমা করে দিয়েও। আমি তোমার সাথে অনেক অন্যায় করছি। তার পর তুমি কখনো প্রতিবাদ করো নাই। তুমি সত্যি অনেক ধৈর্য শীল মেয়ে।
কথক: তুলি কথাটা বলে রিয়াকে আদিত্যর সামনে বসিয়ে দিয়ে দিল! আর এইদিকে কাজী সাহেব সব কিছু ঠিক করে। ওদের দুজনকে বিয়ে পড়িয়ে দিলো" আর রাফি বললো?
রাফি: তুলি তুমি কিছু মনে না করলে, তোমাকে আমি বিয়ে করতে চাই। তোমাকে আমি প্রথম দেখাতে ভালোবেসে ফেলছিলাম। কিন্তু ভাইয়ার হবু বউ বলে কিছু বলি নাই!
তুলি: বিয়ে করতে পারি একটা শর্তে, লুচ্চামি ছেড়ে দিবে।
কথক: তুলির কথা শুনে সবাই হেসে দিলো"! তার পর রাফি মাথা নিচু করে লজ্জা মাখা কন্ঠে বললো?
রাফি: বউ থাকলে আবার লুচ্চামি করতে যাবো কেন? বিয়ে তো করে দেখো!
কথক: আদিত্যর আব্বু আম্মু তুলির আব্বু আম্মুর সাথে কথা বলে। রাফি আর তুলির বিয়ে দিয়ে দিলো" দুইজন গাড়িতে উঠে বাড়ির উদ্দেশ্য রওনা দিলো! আদিত্য রিয়ার পাশে বসে ও হাত টা শক্ত করে বুকের সাথে জড়িয়ে ধরে সারা রাস্তায় চলে গেলো। বাসায় গিয়ে যার যার বাসর রুমে বসিয়ে দিয়ে আসলো! আদিত্য আর রাফিকে ওর কাজিনরা ধরে রাখছে। আদিত্য সবার সামনে বলে উঠলো?
আদিত্য: উফফ এই তোরা ছড়বি , আমার না বাসর হইছে৷ রাফির তো হই নাই ওকে যেতে দে" আর সাথে তোদের মায়া হলে আমাকে ও যেতে দে ভাই!
কথক: আদিত্যর কথা শুনে সবাই হাসতে লাগল! আদিত্যর আম্মু আব্বু আর রিয়ার আব্বু রুমা কিছুটা লজ্জা পেয়ে গেলো! সালেহা চৌধুরী বললো?
সালেহা চৌধুরী : ওদের যেতে দেও তোমরা ধরে রেখেও না।
কথক: সালেহা চৌধুরী কথা শুনে আদিত্য আর রাফিকে ছেড়ে দিলো। আদিত্য তো দৌড়ে বাসর ঘরে চলে গেলো। আদিত্য বাসর ঘরের সামনে গিয়ে হাটুর উপরে হাত রেখে হাপাতে লাগলো! তার পরে রুমে ঢুকে রিয়ার দিকে যেতে লাগলো?
রিয়া: ওতোক্ষন পর আসার সময় হলো?
আদিত্য: আমি কি করবো ওরা তো ছাড়তে চাইছিলো না।
রিয়া: ভালো এখন ঘুমাও যাও।
আদিত্য: ওমা ঘুমাবো কে? বাসর রাতে কেউ ঘুমায় নাকি?
রিয়া: ইয়া বাসর রাত কইবার করতে চাও। একবার হইছে সারারাত ঘুমাতে দেও নাই। এই বাসর রাতে আমি ঘুমাবো আর তুমি তাকিয়ে তাকিয়ে আমাকে দেখবে!
আদিত্য: তাই নাকি? আচ্ছা আগে কাছে যায়।
কথক: রিয়ার কাছে গিয়ে আদিত্য রিয়ার পাশে বসলো? রিয়ার দুইটা হাত ধরে বললো?
আদিত্য: আচ্ছা তুমি তখন মিথ্যা বলে কেন? তুমি তো আমাকে বলতে না করো নাই। আমি ইচ্ছে করে কাউকে কিছু বলি নাই!
রিয়া: আমি মিথ্যা বলছি এই জন্য" আমার স্বামীর চরিত্র বিষয়ে আমি জানি। আমি চাই নাই আমার স্বামী চরিত্র ব্যাপারে কেউ জেনে যাক। আর আমার স্বামীকে সবাই ছোট নজরের দেখুক। আমার স্বামী আগে কেমন ছিলো সেইটা অতীত। এখন আমি আমার স্বামীকে পরিবর্তন করতে চাই। তাই আমি আমার স্বামীকে কারো কাছে ছোট হতে দেখতে পারবো না।
কথক: রিয়ার কথা শুনে আদিত্য অনেকটা ইমোশনাল হয়ে যায়। আদিত্য রিয়াকে জড়িয়ে ধরে বললো?
আদিত্য: আমি অনেক ভাগ্যবান তোমাকে স্ত্রী হিসাবে পেয়েছি৷ সেইদিন আমি শখের বসে বিয়ে করলেও। তোমাকে বিয়ে করে আমি কোনো ভুল করি নাই! আই লাভ ইউ জান
রিয়া: আই লাভ ইউ টু জান
কথক: দুইজন দুইজনকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো!
সমাপ্ত
[ আসসালামু আলাইকুম " জানি না গল্পটাহ কেমন হয়েছে! বাট এই গল্পতে আপনাদের অনেক সুন্দর সুন্দর কমেন্ট পড়ে।মাঝে মাঝে প্রচন্ড হাসি পেয়েছে" আবার কিছু কমেন্ট দেখে একটু খা'রা'প লাগছে। বাট তার পর গল্পটাহ প্রথমে ১৮+ জন্য অনেকেই আমাকে পা/ব/না/য় পাঠিয়ে দিতে চাইছেন! তাদের বলছি পাবনার রাস্তা আমি চিনি না! আমাকে দয়া করে দিয়ে আছেন! তাহলে আমার উপকার হতো' আর ও হ্যাঁ কিছু গা/ঞ্জা কিনেও দিয়েন আমি আবার গাঞ্জা না খেয়ে গল্প লেখতে পারি না 🥱। যাই হোক" যারা আমাকে অনেক সুন্দর সুন্দর কমেন্ট করে অনেকটাহ গল্পের প্রতি আগ্রহ বেরিয়ে দিয়েছেন। আপনাদের সবাইকে অসং্খ্যা ধন্যবাদ। আর গল্পের ভিতরে হইতো অনেক ভুল আছে। সবাই ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন" এইটাহ কল্পনা একটা গল্প সাথে বাস্তবের সাথে কিছুটাহ ধরার চেষ্টা করছি।জানি কত টুকু পারছি বাহ পারি নাই! যাই হোক সবাই ভালো থাকবেন" সুস্থ থাকেন এই দয়া করি! আর আপনারা চাইলে নতুন গল্প নিয়ে আসবো! আর যদি বলে ছলনাময়ী গল্পের সিজেন ২ দিতে তাহলে ওইটায় নিয়ে আসবো!]
0 Post a Comment:
Post a Comment